অত্যধিক মাত্রায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে যাওয়া, সারাক্ষণ বুক ধড়ফড় করা, অস্বস্তি মাথা ঘোরানো | এই সমস্যাগুলো তৈরি হলে আমরা অনেকে ভয় পেয়ে যাই | ভাবি ব্লাড প্রেসার হয়ে গিয়েছে | অথবা ডায়াবেটিস হয়েছে | কিন্তু আসলে এ লক্ষণ গুলো বলছে আপনার ব্লাডে অর্থাৎ রক্তের মধ্যে কোলস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেছে | অর্থাৎ খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেছে |
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, যাদের ব্লাড এর মধ্যে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল বেড়ে যায় | এরা বেক্তিগত জীবনে পিছিয়ে পড়ে | কর্ম ক্ষেত্রে পিছিয়ে যায়, প্রমোশন হয় না | ঠিকভাবে তারা কাজে মনোযোগ দিতে পারে না বলে বস রেগে যায় | ব্যক্তিগত জীবনেও তারা সন্তান স্ত্রী বাবা-মা সবার কাছেই ভর্ৎসনার স্বীকার হয় | কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে মানুষের ব্যক্তিগত জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে | দাম্পত্য জীবনে ও নেমে আসে ভয়াবহ হতাশা আর গ্লানি | তাই মানুষের ব্যক্তিগত জীবনকে সুখ শান্তি ও নির্মমতায় ভরে তুলতে, সারাদিন একটিভ থাকতে অবশ্যই আপনার ব্লাড এর সাথে মিশে থাকা এই বাজে ক্লোস্ট্রল গুলোকে সরিয়ে দিতে হবে | তা না হলে আপনি কখনো উন্নতি লাভ করতে পারবেন না |
এখন আসুন এই এলডিএল বাড়ে কেন ?
এলডিএল বেড়ে যায় অতিরিক্ত মাত্রায় দুশ্চিন্তা, নিয়ম তান্ত্রিক খাবার দাবার না খাওয়া | এবং চর্বিযুক্ত খাবার যেমন গরুর মাংস খাসির মাংস খুব বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলা |
আমরা আজকে আলোচনা করবো এই এলডিএল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করবেন কিভাবে ?
১. বাদাম : বাদাম হচ্ছে সর্বপ্রথম খাবার যেটা আপনার কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপকারী | মায়া মনে রাখবেন উপকারী বাদাম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে উপকারী হচ্ছে, কাঠবাদাম এবং ওয়ালনাট | ওয়ালনাট হচ্ছে বাংলাতে যেটাকে আমরা বলি আখরোট বাদাম | তো এই ওয়ালনাট এ থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, এটি একটি পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড | এবং কাঠবাদাম এর মধ্যে থাকে অ্যামাইনো এসিড | গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন যদি আপনি দশটি পরিমাণ কাঠ বাদাম খান, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার শরীরের যে খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ এলডিএল, সেটার মাত্রা কমে যাবে | পাশাপাশি এই কাঠবাদাম এবং ওয়ালনাট এগুলো কিন্তু আপনার চুলের জন্য খুবই উপকারী | তার পাশাপাশি ত্বকের জন্য এগুলো খুবই উপকারী | তাহলে চেষ্টা করবেন দৈনিক কমপক্ষে দশটি করে বাদাম খেতে |
২. সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছ : সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছ এর মধ্যে টুনা মাছ রয়েছে এবং এছাড়া অন্যান্য মাছ রয়েছে | কিন্তু আমরা জানি সে মাছগুলো আমরা সহজেই কিনতে পারব না | বাংলাদেশের বাজারে যে মাছগুলো পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্য ফার্মে টেনারী বর্জ্য খাইয়ে যে মাছগুলো উৎপাদন হয় সে মাছগুলো না কিনে কিছুটা দেশি মাছ কেনার চেষ্টা করুন | যেটাতে আপনি বিশুদ্ধ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড পেয়ে যাবেন | যেমন আপনি শোল মাছ কিনতে পারেন, আপনি শিং মাছ কিনতে পারেন, আপনি দেশি কৈ মাছ কিনতে পারেন, আপনি পাবদা কিনতে পারেন | এছাড়াও যেকোন গুঁড়ো মাছ কিনতে পারেন |
৩. রসুন : প্রিয় দর্শক বলা হয়ে থাকে এলডিএল কোলেস্টেরল এর সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে রসুন | মানে আপনার পেটে রসুন খেলে এলডিএল কোলেস্টেরল শরীরের টিকে থাকতে পারে না | এটা ডাইরেক্ট একশন করে | প্রতিদিন সকালে দুইটি রসুনের কোয়াকে ভালোভাবে পাটায় বেটে হালকা উষ্ণ পানির সাথে গুলিয়ে যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে বুকে ধড়ফড় কমে যাবে | অর্থাৎ এলডিএল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে | তাই অবশ্যই খাদ্যতালিকায় রসুনকে রাখবেন | সকালে খেতে পারেন বা না পারেন, দুপুরে ভাতের সাথে অন্তত এক কোয়া রসুন অবশ্যই খাবেন | আশা করি এই তিনটি খাবার আপনি যদি নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে আস্তে আস্তে ঔষধ ছাড়াই আপনার শরীরের এলডিএল বা বাজে কোলেস্ট্রলটা একদম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে |
তখন দেখবেন আপনার স্ট্যামিনা অনেক বেড়ে গেছে, বুকের ধড়পড় কমে গেছে | অস্বস্তি ভাব মাথা ঘোরানো, অল্পতেই হাঁপিয়ে যাওয়া এই সমস্যাগুলো কমে যাবে | এগুলো কিন্তু আমাদের ব্যক্তিগত জীবনকে আটকে দেয় | আপনি আনপ্রডাক্টিভ হয়ে যাবেন | তাই অবশ্যই শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে |