চা খাওয়ার আগে বা পরে এই খাবারগুলো ভুলেও খাবেন না |
আমরা চায়ের সঙ্গে এমন কিছু খাবার খাই, যার কারণে বহু রোগের সৃষ্টি হয় | হয়তো আপনার দেহে এমন কিছু হয়েছে, যা আপনার চায়ের সঙ্গে খাওয়া খাবারের কারণে হচ্ছে |
আবার চা কখন খেতে হবে ? কোন সময় চা খেলে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়, এ সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার তথ্য জানা থাকা উচিত | এ সম্পর্কে কি আপনার পরিপূর্ণ তথ্য জানা আছে ? যদি না জানা থাকে তাহলে এই লেখাগুলো অবশ্যই শেষ পর্যন্ত পড়ুন |
প্রথমেই বলি হয়তো আপনি সকালবেলা নাস্তা খাওয়ার পরেই একটা চা খেয়ে নিচ্ছেন | নাস্তা খাওয়ার পরেই চা খাওয়া আপনার দেহে যেন ততটাই ক্ষতিকর যে, এটা অনেকটাই স্লো পয়জন করে থাকে আপনাকে | কিন্তু এই নাস্তা খাওয়ার পরে চা খাওয়া আপনার দেহের জন্য অনেকটাই ক্ষতিকর |
অনেক নিউট্রিশনিস্টরা এটাকে স্লো পয়জনও বলে থাকেন | আবার অনেকে খালি পেটে কিছু না খেয়ে এক কাপ চা খাচ্ছেন | আবার কেউ কেউ আছেন যারা খালি পেটে দুধ চা পর্যন্ত খেয়ে নিচ্ছেন | খালি পেটে দুধ চা খাওয়া এতটাই ক্ষতিকর যে, তা আপনার দেহের বিভিন্ন রোগের জন্ম দিবে |
প্রাথমিকভাবে আপনার শরীরে এসিডিটি, আলসার পর্যন্ত নিয়ে যাবে | বদহজম, টক ঢেকুর, হাত পায়ের জয়েন্ট ব্যথা সৃষ্টি করবে | বিভিন্ন সময়ে ব্যথার কারণে ভালোভাবে হাঁটতে না পারা, এই সমস্ত রোগের জন্ম কিন্তু সকাল বেলা খালি পেটে চা খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে |
প্রশ্ন আসতে পারে চাটা কখন খাব ? এর জন্য বলে রাখি চা খাওয়ার ভালো সময় হলো নাস্তা খাওয়ার একঘন্টা পরে আপনাকে চা টা খেতে হবে | এবং কোনভাবে নাস্তা করার আধা ঘণ্টার মধ্য চা খাবেন না | এতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে- আপনার কিডনির সমস্যা হবে, হার্টের সমস্যা হবে, হার্টে ব্লক ধরা পড়বে, এছাড়াও বহুবিধ জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে |
প্রিয় দর্শক দুধ হল ক্যালসিয়াম ও আয়রনসমৃদ্ধ একটি খাবার | এধরনের ক্যালসিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সাথে কখনোই চা খাওয়া যাবেনা | কারণ চায়ের মধ্যে এমন কিছু যৌগ রয়েছে, যা অক্সালেট নামে পরিচিত | এই ধরনের যৌগ আপনার ক্যালসিয়াম ও আয়রন এর শ্বসনে তো বাঁদা দিয়ে থাকে, সেই সঙ্গে বিভিন্ন রোগের ও সৃষ্টি করে থাকে | তাই অনেকেই দুধ চা খেয়ে ভাবেন দুধের পুষ্টি ও পেলাম, চায়ের গুনাগুন পেলাম | আসলে একদম ভুল ধারণা | চা এবং দুধ একসাথে মিশ্রিত হওয়ার পরে যে বিক্রিয়াটা হয় তাতে দুধ এবং চায়ের কোন পুষ্টি উপাদানই থাকে না | বরং সেটা বিষাক্ত হয়ে যায় |
এছাড়া চায়ের সঙ্গে অনেকে বাদাম খেয়ে থাকে হয়তো চিনা বাদাম ভাজা বা যেকোনো বাদাম ভাজা চায়ের সঙ্গে খেয়ে থাকি | কিন্তু আপনি যদি চায়ের পাশাপাশি বাদাম খান তাহলে কিন্তু বাদামের গুনগতমান আপনার শরীরে প্রবেশ করবে না | বরং উল্টো ফল হবে | এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে খাবারগুলো চা এর পাশাপাশি খেলে গ্যাস এসিডিটি ও বদহজম হতে পারে | এমনকি থাইরয়েড এর মত রোগ হওয়ার ও সম্ভাবনা থাকে | তাই এই খাবারগুলো অন্তত আধা ঘণ্টা গ্যাপ দিয়ে খাওয়া উচিত | মনে রাখবেন আপনি চা এর পাশাপাশি এই খাবারগুলো খেলে আপনার দেহের অভ্যন্তরে খাবার থেকে প্রাপ্ত জিংক শোষণে বাধা দিয়ে থাকে | শুধুমাত্র আয়রন বা ক্যালসিয়াম নয় যখন আপনার শরীর জিংক শ্বসনে বাধাপ্রাপ্ত হবে তখন কিন্তু এমনিতেই আপনি দুর্বল হয়ে পড়বেন | এছাড়া বিভিন্ন রোগ আপনার দেহে প্রবেশ করবে কারন জিংক আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয় | তার পাশাপাশি এটি আমাদের শরীরকে অনেক বেশী মজবুত করে তোলে | পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি আপনি চা খেতে গিয়ে এটা যদি আপনার শরীরে পুষ্টিকর খাবার থেকে প্রাপ্ত জিংক এর শোষণ বন্ধ করে দেয় | তাহলে কখনই আপনার চা এর পাশাপাশি খাবারগুলো না খেয়ে বরং আধা ঘণ্টা গ্যাপ দিয়ে চা টা খাওয়া উচিত |
প্রিয় দর্শক সর্বশেষ বলবো সকালে নাস্তা করার একঘন্টা পরে চা খাবেন | বিকেল বেলা যখন অপেক্ষাকৃত আপনার পেট খালি থাকে তখন চাইলে আপনি এক কাপ চা খেয়ে নিতে পারেন | সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি গ্রীন টি খেতে পারেন দুধ চা এভোয়েড করে লাল চা খেতে পারেন | মনে রাখবেন গ্রীন টি খেলে আপনার হার্টের রোগ হবে না | গ্রীন টি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে | কিডনির সমস্যা সহ কোলস্টেরলের বৃদ্ধি, হার জয়েন্ট, পেশীর ব্যথা বুড়িয়ে যাওয়া এ ধরনের সমস্যার বিরুদ্ধেও গ্রীন টি কাজ করে |
আরেকটা কথা বলি- চা খাওয়ার ক্ষেত্রে মিষ্টি চা খাবেন না | চায়ের সঙ্গে চিনি মিক্সড করলে চায়ের গুনাগুন একদমই থাকে না | এটা আপনার দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর | চায়ের সাথে দুধ খাবেন না | এবং চা খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে অন্য কোন খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন | এই নিয়মগুলো পালন করলে আপনি দেখবেন আপনার শরীর থেকে সর্বপ্রথম যেই রোগটা বিদায় হবে সেটা হচ্ছে এসিডিটি | টক ঢেকুর এবং পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেয়ে যাবেন | এবং দীর্ঘমেয়াদী আপনার হার্ট ভালো থাকবে, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ব্লাডে কোলেস্টরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে আসবে ইনশাআল্লাহ |
সর্বশেষ একটি অনুরোধ করবো- চেষ্টা করুন প্রতিদিন কমপক্ষে এক কাপ করে গ্রীন টি খাবেন | এতে করে আপনি সারা জীবন অপেক্ষা কৃত ভাবে রোগের হাত থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন ইনশাল্লাহ |